চোখের নিচের কালো দাগ এবং গর্ত দূর করার ১০ টি উপায়

"আসসালামু আলাইকুম" প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনারা কি চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। অনেকেই চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ভুল পরামর্শ দিয়ে থাকে। আজকে আমরা এই সম্পর্কে কিছু সঠিক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করব "ইনশাআল্লাহ"।
আপনি যদি চোখের নিচের কালো দাগ কিভাবে দূর করে এই সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি আপনি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন।

সূচিপত্রঃ চোখের নিচে কালো - চোখের নিচে গর্ত

চোখের নিচে গর্ত হওয়ার কারণ কি

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনারা হয়তো চোখে নিচের গর্ত হওয়ার কারণ কি এই সম্পর্কে জানা নেই। ভাই আপনি যদি চোখের নিচের গর্ত হওয়ার কারণ কি এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করছি উপকৃত হবেন "ইনশাআল্লাহ"।

চোখের নিচে গর্ত হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে। চলুন সেই সকল কারণগুলো আগে জেনে নেই-

  • চোখের নিচে গর্ত হওয়ার মূল কারণ হলো অতিরিক্ত ক্লান্তি, রাত জাগা, অবসাদ এবং অতিরিক্ত ঘুম। ঘুমের অভাব ক্লান্তি ত্বককে হ্যাকাসে এবং নিস্তেজ করে তোলে। চোখের নিচে হালকা ফোলা ভাব তৈরি করে, যা চোখের নিচে গারো কালো দাগ সৃষ্টি করে।
  • এলার্জি বা চোখের শুষ্কতার কারনেও চোখের নিচে কালো দাগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এলার্জির কারণে ত্বকে লালচে ভাব এবং চোখ ফুলে যায়। সাধারণত এলার্জি হলে রক্তের নিঃসৃত ভিটামিন গুলো রক্তনালিতে প্রসারিত হয় ফলে চোখের নিচে গারো কালো দাগ সৃষ্টি হয়।
  • পানিসূন্যতা বা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। ডিহাইড্রেশন হলে চোখ নিচে বসে যায় বা চোখের নিচে গর্ত হয়ে যায়।
  • অনেকের মধ্যে এটা আবার পারিবারিক বা বংশগতভাবে হতে পারে।

চোখের নিচে ফোলা কোন রোগের লক্ষণ

আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যারা চোখের নিচে ফোলা কেন হয় এবং এটি কোন রোগের লক্ষণ এই সম্পর্কে জানে না। আপনি যদি এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে, আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন-

মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বক, সামগ্রিক শরীর, চোখের চারপাশ আস্তে আস্তে আলগা হতে শুরু করে। এটি বৃদ্ধ বয়সে বেশি হয়ে থাকে কারণ ত্বকে কম লোকাজেন উৎপাদনের কারণে হয়ে থাকে। এটি চর্বিকে চোখের নিচের অংশে যেতে দেয় না এই কারণে চোখের নিচ ফোলা দেখায়। এটি সাধারণত কোন রোগ না। তবে এলার্জির ক্ষেত্রে এটি হয়ে থাকতে পারে।

চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয়

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনাদের মাঝে অনেকেই জানে না যে চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয় বা চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার কারণ কি। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা এই সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাহলে আসুন এবার জেনে নেয়া যাক-

চোখের নিচে কালো দাগ হওয়া স্বাভাবিক। কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চোখের নিচের পাতা এবং ত্বক পাতলা হয়ে যাচ্ছে। কোলাজেন ও চর্বিকে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষার জন্য দায়ী হয়ে থাকে। এর প্রতিক্রিয়ার ফলে চোখের নিচের রক্তনালী গুলো দৃশ্যমান হয় এবং চোখের নিচে কালো দেখায়।
  • প্রথমত অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণে চোখের নিচে কালো দাগ সৃষ্টি হয়ে থাকে।
  • প্রতিদিন বা ডেইলি দিন অতিরিক্ত রাত জাগার কারণে এই কালো দাগ হয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত রাত জাগা এড়িয়ে চলতে হবে।
  • এলার্জি বা চোখের শুষ্কতার কারণেও এই কালো দাগ হয়ে থাকতে পারে। তাই চোখের নিচের বা ত্বকের শুষ্কতা যেন না হয় এমন ধরনের খাবার খেতে হবে যেমনঃ ফলমূল। এবং তার সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • চোখের নিচের ফোলা ভাব থেকে এই কালো দাগের সৃষ্টি হতে পারে।

চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

চোখের নিচে কালো দাগ হলে আমরা অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ি এবং সবসময় ভাবি যে চোখের নিচের কালো দাগ কিভাবে দূর করব এ বিষয়ে। তাই আজকের আর্টিকেলটির ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে কালো দাগ দূর করবেন এই বিষয়ে জানাতে চলেছি। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি উপকৃত হবেন "ইনশাআল্লাহ"।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়-

টমেটো ও লেবুর প্যাক -- টমেটোর রস সাধারণত চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এক টি টেবিল চামচ টমেটোর রসের সঙ্গে এক টি টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে এটি সুন্দর করে মিশ্রণ করতে হবে। অতঃপর চোখের যে অংশে কালো দাগ রয়েছে সেই অংশটুকুতে লাগিয়ে ১০ মিনিট অর ধুয়ে ফেলতে হবে।

আলুর রস -- আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, শর্করা ও এনজাইম যার চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার পাশাপাশি তত্বের সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে থাকে। একটি কাঁচা আলু গ্রেট বা পিষে রস বের করে নিতে হবে। একটি তুলার মাধ্যমে আলুর রস চোখের কালো অংশে লাগিয়ে ১০ মিনিট শুকানোর জন্য রেখে দিতে হবে। অতঃপর ধুয়ে ফেলতে হবে। সবচেয়ে ভালো ফলাফল পেতে রাতে ঘুমানোর আগে এই প্যাকটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
আমণ্ড অয়েল -- আমণ্ড অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, যার চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে এবং ত্বককে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। রাতে ঘুমানোর আগে অল্প পরিমাণেআমণ্ড অয়েল চোখের নিচে কালো অংশে হালকা মেসেজ করে রেখে দিন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এটি ধুয়ে ফেলতে হবে।

কমলার রস -- কমলার রসের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে একটি পাত্রে ভালো করে মিক্সার করে নিতে হবে। এবং সেগুলো চোখের কালো অংশে লাগিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট রাখতে হবে, এবং তারপর সেগুলোকে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে কিছুদিন দেয়ার পর আস্তে আস্তে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে "ইনশাআল্লাহ"।

ঠান্ডা দুধ -- ঠান্ডা দুধ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে অনেকভাবে উপকার করে থাকে। অল্প কিছু সংখ্যক তুলোর সাহায্যে ঠান্ডা দুধ চোখের কালো দাগে অংশে লাগিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে সপ্তাহে কয়েকবার লাগালেই "ইনশাআল্লাহ" চোখের নিচের কালো দাগ ভালো হয়ে যাবে।

শসার মাধ্যমে -- সাধারণত ঘরে বসেই আরো অনেক পদ্ধতিতে চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে পারেন যেমন শসার মাধ্যমে। শসা কাটার পর শসার গায়ের আঠা চোখের নিচের কালো দাগের স্থানে হালকা করে লাগিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট রেখে দিতে হবে এবং তারপর সেগুলো ধুয়ে ফেলতে হবে।

এ সকল কাজ নিয়মিত করলেই "ইনশাআল্লাহ" চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।

মেয়েদের চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ক্রিম

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনাদের মাঝে অনেকেরই হয়তো অজানা যে, মেয়েদের চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ক্রিম আছে এ সম্পর্কে। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু ক্রিমের নাম এবং কার্যকরী উপাদান সম্পর্কে নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আমাদের মধ্যে অনেকেরই চোখের নিচে ভাঁজ, কালো দাগ এবং চোখের নিচে ফোলা ভাব সৃষ্টি হয়ে থাকে। চোখের নিচের এই দাগ বা ভাঁজ নিয়ে আমরা অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। তাই আজকের আর্টিকেলটিতে কথা বলব ২ টি আই ক্রিম নিয়ে। তাহলে আসুন এবার জেনে নেয়া যাক সেগুলো কি কি-

CeraVe Eye Repair Cream -- এই ক্রিমটি সাধারণত অল্প সময়ের মধ্যেই ত্বকে মিশে যায় এবং কাজও করে দ্রুত। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এই আই ক্রিমটি সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যায়। এর কার্যকারিতা হলো-
  • চোখের নিচের ভাঁজ এবং চোখের ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • সিরামাইট পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকার কারণে চোখের ক্ষতি এড়িয়ে চোখকে করে হেলদি।
  • এর মধ্যে হায়ালুরনিক এসিড থাকার কারণে চোখের নিচে অনেক সময় হাইড্রেটেড এবং নরম থাকে খসখসে ভাব সৃষ্টি হয় না। হাইড্রেশন চোখের নিচের ভাজ কমাতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • এর মধ্যে নিয়েসিনামাইড ড পর্যাপ্ত ভাবে থাকার ফলে তা হয়ে ওঠে শক্তিশালী। আর এর সাথে সাথে শান্ত রাখতে সাহায্য করে থাকে।
3W Clinic Honey Eye Cream -- এই ক্রিমটির মধ্যে মধু এবং প্রোপোসিল নামক পদার্থ থাকার ফলে চোখের নিচে ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধান করে থাকে। এবং ভিতরে চোখ এরিয়া হয়ে ওঠে অনেক হেলদি। এর কার্যকারিতা হল-
  • চোখের পাশের ত্বকের চিকিৎসা দিয়ে স্কিন করে তোলে ব্যারিয়ারক এবং স্ট্রং।
  • আন্ডার আই এরিয়েকে রাখে ময়েশ্চারাইজড কোরে।
  • এই ক্রিম ব্যবহারের ফলে চোখের নিচের কালো দাগ কমিয়ে আনে। এর ফলে চোখের নিচের অংশ হয় অনেক সুন্দর এবং মসৃণ।
  • এই ক্রিমটি চোখের নিচের ভাঁজগুলোকে সুন্দরভাবে সমান করে থাকে। যার ফলে ধীরে ধীরে ফাইনলাইনস কমতে থাকে।

চোখের নিচে কালো হয় কোন ভিটামিনের অভাবে

আপনাদের মাঝে অনেকেই অজানা রয়েছে যে, চোখের নিচে কালো হয় কেন এবং তা কোন ভিটামিনের জন্য হয়ে থাকে। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা এই বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেয়ার চেষ্টা করব "ইনশাআল্লাহ"। তাহলে আসুন এবার জেনে নেয়া যাক চোখের নিচে এমনটা কেন হয়ে থাকে এবং কোন ভিটামিনের জন্য হয়ে থাকে।

চোখের নিচে কালো দাগ সাধারণত খাবার কম খাওয়ার ফলে হয়ে থাকে। ইয়ং জেনারেশনের ছেলে মেয়ে উভয়েরই চোখের নিচে কালো দাগ দেখতে পাওয়া যায়। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে রাত জাগা এবং অতিরিক্ত পরিমাণে ঘুম পাড়ার ফলে এটি হয়ে থাকে।

অতিরিক্ত রাত যাওয়ার ফলে সকালে উঠতে পারা যায় না এর ফলে সকালের সূর্যের ভিটামিন ডি থেকে আমরা বঞ্চিত থাকি। এর ফলে আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয় ফলে চোখের নিচে কালো দাগ এবং গর্ত সৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই আমাদের উচিত সময়মতো ঘুমানো এবং সকালে ওঠা।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠ্যবৃন্দ আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি যে, চোখের নিচের গর্ত হওয়ার কারণ কি, চোখের নিচে ফোলা কোন রোগের লক্ষণ, চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয়, চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়, চোখের নিচে কালো হয় কোন ভিটামিনের অভাবে ইত্যাদি নানা বিষয় সম্পর্কে।

আপনারা যদি আমাদের এই আর্টিকেলটিভ সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি অন্য সকলের মাঝে এবং আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে দিন। যেন তারা এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারে।

"আসসালামু আলাইকুম"
""ধন্যবাদ""

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পয়েন্টার ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url