শসা খাওয়ার উপকারিতা এবং আমরা শসা কেন খাব

"আসসালামু আলাইকুম" আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানানোর চেষ্টা করেছি যে, শসা খাওয়ার উপকারিতা - আমরা শসা কেন খাব, শসা খাওয়ার অপকারিতা, ত্বকের শসার উপকারিতা কী ইত্যাদি নানা বিষয় সম্পর্কে।
যদি আপনি শসা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং উপরোক্ত সকল বিষয় সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে, আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করুন। আশা করছি উপকৃত হবেন। তাহলে আসুন এবার বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-

সূচিপত্রঃ শসা খাওয়ার উপকারিতা - আমরা শসা কেন খাব

আমরা শসা কেন খাব

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে, শসা খেলে কি হয় বা আমরা শসা কেন খাব। আপনি যদি শসা খাওয়ার উপকারিতা - শসা কেন খাবেন এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকেরে আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

সাধারণত আমরা সুস্থ থাকার জন্য নানা ধরনের ফলমূল খেয়ে থাকি। যা আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকে। এমনই একটি ফল হল শসা। যা শরীরের পানির ঘার্তি পূরণ করে থাকে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে থাকে। এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল-

প্রতিদিন শসা খেলে কি হয়

আপনি যদি নিয়মিত শসা খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে নানা ধরনের উপকার হয়ে থাকবে। আপনি যদি প্রতিদিন একটি করে শসা খেয়ে থাকেন তাহলে, আপনার যে সকল উপকার হবে তা হল-
  • হজমে সহায়তা
  • হার মজবুত করতে সহায়তা
  • হৃদযন্ত্রের সুস্থতা
  • আদ্রতা রক্ষা
  • হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা
  • চুল ও নখের উন্নতি
  • ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল করে
  • মানসিক চাপ কমায়
আপনি যদি প্রতিদিন একটি থেকে দুটি করে শসা খেয়ে থাকেন তাহলে, আপনার শরীরে এ সকল উপকর ছাড়াও আরো নানা ধরনের উপকার হয়ে থাকবে। তাই প্রতিদিন একটি করে শসা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।

শসা কিভাবে খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায়

শসা কিভাবে খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায় তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা এ বিষয় সম্পর্কে কিছু ধারনা তুলে ধরার চেষ্টা করব। শসা উচ্চ মাত্রায় পানির ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। এবং এর মধ্যে নিম্নমাত্রায় ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে।
যারা ওজন কমাতে অনেক ইচ্ছুক তাদের জন্য শসা একটি আদর্শ শক্তিদায়ক ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে।যারা ওজন কমাতে অনেক আগ্রহী, তারা সালাত ও সুফে বেশি বেশি করে শসা ব্যবহার করবেন। শসা কাঁচা চিবিয়ে খেলে তার শরীরে পাকস্থলীর হজমে বিশেষ ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে শসা রান্না করেও খাওয়া হয়ে থাকে।

খালি পেটে শসা খেলে কি ক্ষতি হয়

খালি পেটে শসা খেলে কোন ক্ষতি হয় কিনা তা অনেকেরই অজানা। তাই আমরা আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে এ বিষয়ে সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক খালি পেটে শসা খেলে কোনরকম ক্ষতি হয় কি না।

সকালে খালি পেটে শসা খাওয়া উচিত নয়। কারণ শসায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম সকল ধরনের লোভ ব্লাড প্রেসার এর জন্য দায়ী হয়ে থাকে। খালি পেটে শসা খাওয়ার মাধ্যমে লো ব্লাড প্রেসারের অ্যাটাক হয়ে থাকে। তাই খালি পেটে সকালে শসা খাওয়া উচিত না। দুপুরে খাবারের সঙ্গে বা এমনিভাবেই শসার সালাত, সুপ এবং গোল গোল করে কেটে খেতে পারেন।

শসা খাওয়ার উপকারিতা

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে, শসা খাওয়ার উপকারিতা কী বা শসা খেলে কি কি উপকার হয়ে থাকে। তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা এই সকল বিষয় সম্পর্কে জানব।

শসা খাওয়ার মূলত অনেক উপকার রয়েছে , তার মধ্যে কিছু মূল্যবান উপকার নিচে তুলে ধরা হলোঃ-

হজমে সহায়তা -- শসাতে সাধারণত কিছু পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে। খাদ্য এবং পানি খাবারে শসা হজমে সহায়তা করে থাকে। প্রতিদিন শসা খাওয়ার মাধ্যমে পচতন্ত্র সুস্থ ও সুন্দর থাকে। এবং শসা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে থাকে।

হার মজবুত করতে সহায়তা -- শসাতে সাধারণত ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হার মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে। ভিটামিন কে শরীরের হাড়ের ক্ষয়ের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে। এবং ক্যালসিয়াম শোষণ কাজে সাহায্য করে থাকে।

হৃদযন্ত্রের সুস্থতা -- শসাতে রয়েছে ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো নানা ধরনের উপাদান। এই তিনটি উপাদান সাধারণত হৃদ যন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে। পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে এর মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত শসা খাওয়ার কারণে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সাধারণত ভিটামিন কে রক্তের জমাট বাধা এবং ক্যালসিয়াম প্রবাহের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
আদ্রতা রক্ষা -- শসাতে সাধারণত ৯৫ শতাংশ পানি রয়েছে। যার শরীরে আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে থাকে। প্রতিদিন যদি পানি পান করার কথা ভুলেও যান তবে প্রতিদিন শসা খাওয়া হয়ে উঠতে পারে আপনার জীবনের উপকারি দিক।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা -- শসাতে রয়েছে অনেক পরিমানে ফসফরাস যা হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী মূল পুষ্টি উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে। শসাতে সাধারণত ৪ শতাংশ ফসফরাস থেকে থাকে যা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অনেক জরুরী। শরীর সুস্থ এবং ভালো ফলাফলের জন্য দৈনিক খাবার তালিকা মধ্যে শসা রাখা ভালো।
চুল ও নখের উন্নতি -- রোগ প্রতিরোধের জন্য শসা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল। শসা খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীর সুস্থ থাকে, তার প্রভাব দেখা যায় সাধারণত চুল ও নখের মাধ্যমে।
ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল করে -- এর ঠান্ডা ও আদ্রতা রাখার উপাদান মলিন ও শুষ্ক ত্বকে সুন্দরভাবে সতেজ করতে সাহায্য করে থাকে। এর ভিটামিন বি-নয়াসিন, ভিটামিন সি। রিবফ্লাভিট এবং জিং ক তকমল ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে থাকে। বিউটি ক্রিম এর পরিবর্তে নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে ত্বক কোমল এবং উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
মানসিক চাপ কমায় -- ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৭ এবং ভিটামিন বি৫ সাধারণত শসাতে পাওয়া গিয়ে থাকে। যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে।

শসা খাওয়ার অপকারিতা

অন্য আমিষ বা শর্করা জাতীয় খাদ্য কম খেয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে শশা খেতে থাকলে, অথবা ক্ষুধা লাগলেই শসা খেলে, নানা ধরনের গ্যাসের সমস্যা, পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। অনেক কিছু সময় ধরে ওজন কমাতে সব সময় শসা খাওয়ার মাধ্যমে হতে পারে বিপত্তি।

শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে সকল ইন্দ্রিয় গুলি পুষ্টি না পেলে বা পুষ্টির অভাবে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়বে। কাজ করার ইচ্ছা বা শক্তি হবে না। তাই শসা অতিরিক্ত পরিমাণে না খেয়ে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। এবং তা শরীরের জন্য উপকারী দিক হয়ে উঠবে।

রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা

আপনাদের মধ্যে অনেকেরই হয়তো বা জানা নেই যে রাতে শসা খেলে কি উপকার হয় বা কিরকম উপকার হয়ে থাকে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানাবো রাতে শসা খেলে কি উপকার হয় বা কি উপকার হয়ে থাকে এই সম্পর্কে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক-

শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এর আগে জানানো হয়েছে। সসা যেহেতু হজম করতে সহায়তা করে এবং শশা নিজে হজম হতে অনেক সময় নেয়। তাই রাতে ঘুমোনোর আগে আগে শসা না হয় উত্তম। অতঃপর রাতের খাবারের 20 থেকে 30 মিনিট আগে শসা খেলে তা অনেকক্ষণ সময় ধরে পেটের মধ্যে থাকবে এবং আস্তে আস্তে হজম হবে। এবং এরকমভাবে শসা খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমতে সহায়তা হবে বা হয়ে থাকবে।

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম হয়তো অনেকেই অজানা। তাই আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করা হবে। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। শসার মধ্যে উচ্চমাত্রায় পানি এবং নিম্নমাত্রায় ক্যালরিযুক্ত উপাদান থেকে থাকে।

ফলে যারা ওজন কমাতে ইচ্ছুক তাদের জন্য শসা আদর্শ ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে। যারা ওজন কমাতে ইচ্ছুক বা ওজন কমাতে চান তারা শসার স্যুপ বা শসা সালাত হিসেবে খেতে পারেন। কাঁচা শসার মধ্যে অনেক পরিমাণ ভিটামিন কে রয়েছে। যা খেলে শরীরের নানা ধরনের অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

ত্বকে শসার উপকারিতা

ত্বকের যত্নে শসার উপকারিতা অনেক রয়েছে। যার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারী তথ্য নিচে আলোচনা করা হলো-
  • শসার গুণের কারণে মুখ বা ত্বকে বরুনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়ে থাকে।
  • ত্বক জ্বালাপোড়া করলে শসার রস লাগাতে পারে "ইনশাআল্লাহ" ভালো হয়ে যাবে।
  • ত্বকের আর্দ্রতা প্রবাহ কমাতে শসা গুরুত্বপূর্ণ।
  • শসাতে সাধারণত ৯৬% পানি থাকে। তাই এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে থাকে।
  • চোখের নিচের কালো দাগ উঠানোর জন্য শসা অনেক উপকারী।
এ সকল কাজ ছাড়াও শসার মাধ্যমে আমাদের ত্বকে আরো বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়ে থাকে। যা হয়তো আমরা খালি চোখে দেখতে সক্ষম হই না। তাই ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই শসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠ্যবৃন্দ আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি যে, শসা খাওয়ার উপকারিতা - আমরা কেন শসা খাব, প্রতিদিন শসা খেলে কি হয়, শসা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা, ওজন কমাতে শসা খাওয়ার গুরুত্ব, তোকে শসার গুরুত্ব কি ইত্যাদি নানা বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

আমাদের লেখা এই আর্টিকেলটি বা পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে এই পোস্ট বা আর্টিকেলটি অন্য সকলের মাঝে বা বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে দিন। যেন তারা আর্টিকেলটি পরে উপকৃত হতে পারে।

"আসসালামু আলাইকুম"
""ধন্যবাদ""

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পয়েন্টার ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url