সোশ্যাল মিডিয়ার মূল ৫ টি উপকারি দিক ও অপকারি দিক জানুন

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। বর্তমান বিশ্বের সময় সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা যেমন নিজেদেরকে স্মার্ট এবং ডিজিটাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছি। ঠিক তেমনি ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে না এমন মানুষ অনেক কমই রয়েছে বা পাওয়া অনেকটা মুশকিল।
আজকের আর্টিকেলটিতে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্রকার উপকারী দিক এবং অপকারি দিকগুলো ছাড়াও যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তা হল সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো এবং ক্ষতিকর দিক সমূহ, সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা সহ আরো ইত্যাদি নানা বিষয় সম্পর্কে। তাহলে আসুন এবার জেনে নেয়া যাক।

সূচিপত্রঃ সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন উপকারি দিক এবং অপকারি দিকগুলো জানুন

ভূমিকা

আমরা সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়া সমূহ আনন্দ উপভোগ করার জন্য ব্যবহার করে থাকি তবুও সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারি দিক এবং অপকারী দিক সম্পর্কে আমাদের সম্পূর্ণ জ্ঞান নেই। তাই আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন উপকারিতা এবং অপকারী দিক সম্পর্কে জানিয়েছি।

সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ছাড়াও আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আমরা জানাতে চলেছি। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন উপকারি দিক এবং উপকারী দিকগুলো সম্পর্কে সকল বিষয়বস্তু জানার জন্য অবশ্য আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়ুন বা আর্টিকেলটির সঙ্গে বহাল থাকুন। আশা করছি অনেক উপকৃত হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া কী সেই সম্পর্কে বিস্তারিত

প্রিয় পাঠকবৃন্দ সোশ্যাল মিডিয়ার কাজ সম্পর্কে জানার পূর্বে আমাদের জানা উচিত যে সোশ্যাল মিডিয়া কি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে? তাই চলুন সোশ্যাল মিডিয়া কি এই সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।

সোশ্যাল মিডিয়া বলতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এবং সাধারণ আন্তঃক্রিয়া মূলক তথ্য প্রযুক্তি বিষয়গুলোকে বোঝানো হয়ে থাকে। এ তথ্য প্রযুক্তিতে কাজে লাগিয়ে আমরা সাধারণত বিভিন্ন প্রকার তথ্য আদান-প্রদান এবং বিভিন্ন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সঙ্গে ইন্টারনেট ভিত্তিক বিষয়বস্তু সৃষ্টি ও নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়া সুবিধা প্রদান করার ইন্টারনেটে যেই সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে সেটি মূলত সোশ্যাল মিডিয়া।

আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা সোশ্যাল মিডিয়া আকাশ সমূহ সম্পর্কে অজানা। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার কাজ সমূহ সহ আরো নানা বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আসুন তা জেনে নেয়া যাক-

সোশ্যাল মিডিয়ার কাজ সমূহ বিস্তারিত

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার কাজ সমূহ সম্পর্কে জানেনা এমন ব্যক্তি অনেক কমই রয়েছে। অতঃপর আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার কাজ সমূহ সম্পর্কে নিচে পয়েন্ট আকারে দেয়া হলো।

  • সামাজিক যোগাযোগ এবং আন্তক্রিয়া মূলক web 2.0 এপ্লিকেশনের সমন্বয় ইতিবাচক দৃষ্টান্ত প্রদান করে থাকে।
  • ব্যবহারকারীরা উৎপাদিত বিষয়বস্তু যেমন প্রকাশিত ডিজিটাল চিত্র, ভিডিও বা ছবি এ সকল ধরনের আন্তঃক্রিয়ার ফলে উৎপাদিত বিষয়বস্তুগুলি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে উপস্থাপন হয়ে থাকে। এগুলোকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জীবন শক্তি ও বলা হয়ে থাকে।
  • ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা ভ্রাম্যমান আলাপের সাপেক্ষে প্রতিটি সেবার জন্য সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল সৃষ্টি করে আমাদের সেবা দিয়ে থাকে। আর সেগুলো মূলত সোশ্যাল মিডিয়ার বাহক বা ধারক হিসেবে কাজ করে থাকে।
  • সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যে সকল ব্যক্তিগণ উক্ত প্লাটফর্মে মজুদ রয়েছে তাদের মধ্যে একটি আন্তজাল বা সামাজিক জাল ভিত্তিক নানা ধরনের ব্যবস্থার বিকাশ ঘটে থাকে।
  • এই সোশ্যাল মিড এর মাধ্যমে আমরা ওয়েবসাইট তৈরি করে বিভিন্ন দেশের ক্লাইন্টের সঙ্গে কথা বলে তা বিক্রয় করার সহজলভ্য হয়ে ওঠে। অতঃপর ক্লায়েন্ট এবং আপনাদের নিজেদের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক সৃষ্টি হতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক কাজ রয়েছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে যেমন আমরা বিভিন্ন কাজ করে থাকি এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো এবং খারাপ দিকগুলো এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ আমাদের বিবেচনা করতে হবে। তাহলে আসুন সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো এবং খারাপ দিকগুলো জেনে নেয়া যাক।

সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো দিকসমূহ সম্পর্কে জানুন

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো এবং খারাপ দিক দুটোই রয়েছে। এর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা ও রয়েছে। এই ভালো এবং খারাপ দিকসমূহ আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা জানে না। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো এবং খারাপ দিকসমূহ সম্পর্কের সম্পূর্ণ তথ্য দেয়ার চেষ্টা করব "ইনশাআল্লাহ"।
বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া আমরা এক ধাপ চলতে পারি না বা চলাফেরা করতে পারিনা। কারণ সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে নিউজ দেখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার কার্টুন, মুভি, গান, নাটক ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস দেখার ক্ষেত্রে আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকি। সাম্প্রতিক সময়ের সকল ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই রিচ করাতে পারি।

তবে একটা বিষয় ভুলে গেলে চলবে না যে একটি মুদ্রার যেমন এপিঠ ওপিঠ ২পিটিওই রয়েছে তেমনি সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো এবং খারাপ উভয়েদিকে রয়েছে। তাই চলুন এবার সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো এবং খারাপ দিক সম্পর্কে কিছু সঠিক তথ্য জেনে নেয়া যাক-

যোগাযোগের মাধ্যম -- আমরা যদি আজ থেকে হাজার হাজার বছর পূর্বের দিকে লক্ষ্য করে তাহলে দেখতে পাবো সেই সময়ে যোগাযোগের মাধ্যম অনেকটা দুষ্কর ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার বিপ্লবের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা সহজ হয়ে গেছে।

আজ থেকে ১০০ বছর আগের কথায় ধরা যাক, সে সময় বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করার জন্য চিঠি লেখা হতো এবং এটি ছিল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। কিন্তু বর্তমান সময়ে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনার সকল বন্ধুর বা পরিবারের সঙ্গে এক হতে পারেন।

বিশেষ করে যখন থেকে আমাদের সকলের হাতে হাতে স্মার্টফোন চলে এসেছে, ঠিক তখনি সোশ্যাল মিডিয়া পুরো মার্কেট দখল করে ফেলেছে। অর্থাৎ আপনি যদি একটি ফোন কিনেন তাহলে সেখানে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাপ গুলো স্টোর করতে আপনি বাধ্য। আর বাধ্য হবেন নাইবা কেন, শুধুমাত্র ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই আপনি সোশ্যাল মিডিয়া বানিয়ে ফেলতে সক্ষম।

এন্টারটেইনমেন্ট এর মাধ্যমে -- বর্তমান সময়ে অনেক মানুষের রয়েছে যারা টিভিতে বিভিন্ন ধরনের গান বা মুভি দেখার চাইতে সোশ্যাল মিডিয়া ঘোরাঘুরি করতে অনেক পছন্দ করে থাকে। অতঃপর আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও ফানি ভিডিও, রিলস ভিডিও সহ আরো নানা ধরনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা দেখতে পারি। যা সোশ্যাল মিডিয়াই উপভোগের মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে একটা বিষয় না বললে নয় সেটি হল সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক হিসেবে ইন্টারটেইনমেন্টের অনেকাংশে লিমিট ক্রস করে ফেলে।

ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম -- আমরা সকলেই জানি যে সোশ্যাল মিডিয়ার প্লাটফর্মটি বর্তমানে ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন জায়গায় হোমপেজে যখন ঘোরাঘুরি করি তখন অটোমেটিকলি আমাদের সামনে কিছু প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস বিজ্ঞাপন দেখা যায়। তবে এই বিজ্ঞাপন গুলো প্রচার করার জন্য অনেক ফ্রিল্যান্সার বা ডিজিটাল মার্কেট আর পড়ে থাকে। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদেরকে কমেন্ট করুন।

একটি গড় হিসাব অনুযায়ী দেখা গেছে বিশ্বের প্রায় ৯৯% মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। অতঃপর এই জন্যই অনলাইন ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে সোশ্যাল মিডিয়াকে টার্গেট করে তাদের পণ্যের বিজ্ঞপ্তি প্রচারণার কাজ চালিয়ে জিতে সক্ষম হচ্ছে। যেকোনো সার্ভিসের সঠিক অডিয়েন্স খোঁজার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে তুলনা করা হয়। তবে এ কথা না বললেই নয় ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া একটি অনেক ভালো দিক।

লাইফ স্টাইল -- আমরা প্রতিদিন লাইফ স্টাইলের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে থাকি। বর্তমানে আমরা কি করতেছি, কি খাচ্ছি, আমাদের চলাফেরা কেমন এই বিষয়গুলো শেয়ার করার মাধ্যমে বন্ধুদের এবং আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে সব সময় কানেক্ট থাকতে পারছি। এই সমস্ত বিষয়ে এবং আমাদের লাইফস্টাইল যখন ফেসবুকের মাধ্যমে শেয়ার করে থাকি তখন অটোমেটিকলি আমাদের বন্ধুদের ওয়েবসাইটে সেটি দেখা যায়। তখন আপনার বন্ধুরা সেই বিষয়টিকে ধারণ করে কমেন্ট এবং শেয়ার করতে পারে।

একজন সেলিব্রেটি তার লাইফস্টাইল কিভাবে লিড করে এ সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। একজন সেলিব্রেটি লাইফ স্টাইল যখন সোশ্যাল মিডিয়ার শেয়ার করে তখন সেই সেলিব্রেটির ফ্যান বেজ কমিউনিটি ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেন। এর পাশাপাশি whatsapp ম্যাসেঞ্জার এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে একটি সামাজিক সম্পর্ক খুব সহজে গড়ে তোলা সম্ভব। অথবা এই কারণে হয়তো এটির নাম দেয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।

আমরা এতক্ষণ ধরে সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো আলোচনা করেছি। এই সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারী দিক ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর দিক রয়েছে। সে বিষয় সম্পর্কে নিচে জেনে নেয়া যাক।

সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিকসমূহ সম্পর্কে জানুন

সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিকসমূহ সম্পর্কে হয়তো আমাদের অনেকেরই অজানা। তাই আমরা আজকের এই আর্টিকেলটিতে সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিকসমূহ ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তাই আসুন সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
মানসিক অবসাদ -- আমেরিকার "জার্নাল অফ প্রিভেন্টিভ" মেডিসিন এর একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল যে, সকল ব্যক্তিগণ বা যারা দিনে 6 থেকে 7 ঘন্টার বেশি সোশ্যাল মিডিয়াই অ্যাকটিভ থাকে তাদের মধ্যে প্রায় ৩ শতাংশের ও বেশি লোক অল্প কিছু সময়ের মধ্যে মানসিক অবসাদ বা পাগল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা থেকে থাকে। এর মূল কারণ হলো আপনি যে কোন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে জানতে পারছেন, পোস্ট এবং মন্তব্য করতে পারছেন।
দিনে ৬ থেকে ৭ ঘন্টার বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ থাকা সফল ব্যক্তির ব্রেন বা মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট ফেলে এর ফলে বিভিন্ন সময় অনেক মানুষ মানসিক অবসাদএ ভুগতে থাকে এবং পাগল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। এর ফলে আমাদের করণীয় দিনে অল্প সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ থাকা এবং বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখা।

একাকীত্ব বৃদ্ধি করা -- এর পূর্বে আমরা বলেছি সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বড় উপায় সম্পর্কে। কিন্তু এর মধ্যে একটি ভয়ের বিষয় হলো বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে যদি কোন ফ্যামিলি বা ফ্রেন্ড সার্কেল যেকোনো কোথাও ঘুরতে গেছে সেখানে গিয়ে নিজেদের মধ্যে কোন মৌখিক কথা না বলে যে যার মত সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকে। এতে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ কমে যাওয়ার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় বিষয়টি আর থাকে না।

গবেষণায় আরো একটি বিষয় জানতে পারা গেছে যে, সকল ব্যক্তিগণ অতিরিক্ত পরিমাণে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে তারা ধীরে ধীরে আরো একাকীত্ব হয়ে পড়ে। এই কারণে এই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।

FOMO -- (FOMO) এর পুরো নাম হল Fear of missing out মূলত এর অর্থ হল হারিয়ে যাওয়ার ভয়। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে যে যারা নিয়মিত টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে আসক্ত হয়ে পড়েছেন বা অতিরিক্ত ব্যবহার করছেন তাদের জন্য এ রোগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়ে থাকে।

এই সমস্যা হলে সে সকল ব্যক্তির মনে হয় যেন তারা কোন কিছু ভুলে যাচ্ছেন বা অনেক কিছু মিস করে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এমনটা হলেও পরবর্তীতে এটি উদ্বেগের সৃষ্টি করে থাকে। অতঃপর ডাক্তার বলেছেন যখন এ ধরনের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন রোগী আসে তারা বিভিন্নভাবে দাবি করে যে FOMO হওয়ার পর থেকে তারা আরো বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাট্রাক্ট হয়ে পড়েছেন বা আসক্ত হয়ে পড়েছেন।

তাই আমাদের অতি সাবধানতার সহিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াকে আমাদের জীবনের উপর কোনভাবেই প্রভাব ফেলতে দেয়া যাবে না। এই সাপেক্ষে আমাদের করণীয় আমরা যে সকল ব্যক্তিরা অতিরিক্ত পরিমাণে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকি সে সকল ব্যক্তিবর্গ আস্তে আস্তে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এর ফলে আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব

সোশ্যাল মিডিয়ার মূল সুবিধা সমূহ

আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে অজানা। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানাতে চলেছি সোশ্যাল মিডিয়ার ৫ টি সুবিধার বিষয় সম্পর্কে। তাই আসুন দেরি না করে জেনে নেয়া যাক সোশ্যাল মিডিয়ার ৫ টি সুবিধা সম্পর্কে।

  • কানেক্টিভিটি -- সোশ্যাল মিডিয়ার প্রধান মূল সুবিধা হচ্ছে কাহিনীটি। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে শেখার জন্য বা নিজের চিন্তা ধারা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে যোগাযোগ করতে পারা যায়।
  • শিক্ষা -- শিক্ষার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের ভালো শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া অনেক সহজ হয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য।
  • সাহায্য -- সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে আপনাদের সমস্যা বর্ণনা করে যে ব্যাপারে সাহায্য নিতে চান বা নির্দেশনা নিতে চান এই সহযোগিতা টাকার জন্য বা উপদেশের জন্য হতে পারে, যা আপনার সমাজ আপনাকে পেতে সাহায্য করতে পারে।
  • গ্রুপ তৈরি -- পৃথিবীতে অনেক মানুষ অনেক ধর্মে বিশ্বাস করে। এই কারণে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের নিজস্ব ধর্ম এবং মতাদর্শে এবং বিভিন্ন জিনিস শিখতে সাহায্য করে থাকে। ঠিক তেমনিভাবে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মতের গ্রুপের যোগ দেয়া যায় এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এবং সেই সাম্প্রতিক আলোচনায় অংশ নেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে।
  • বিজনেসের খ্যাতি ছড়ানো -- সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন যেকোন বিজনেসকে শেষ করে দিতে পারে, তেমনি করে একটি নতুন ব্যবসার বিক্রি বাড়াতে সক্ষমতা রাখে। এর কারনে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি যদি একটা ব্যবসা শুরু করেন তাহলে "ইনশাআল্লাহ" আপনি সফল হবেন।
উপরোক্ত এ সকল সুবিধা ছাড়াও আমরা আরো নানা ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকি সোশ্যাল মিডিয়ার কাছ থেকে। তবে উপরোক্ত যে তথ্যগুলো দেয়া আছে এগুলো সচরাচর আমাদের জীবনে প্রয়োজন হয়ে থাকে।

সোশ্যাল মিডিয়ার মূল অসুবিধা সমূহ

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা সোশ্যাল মিডিয়া অসুবিধা সম্পর্কে অজানা। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জান্নাতে চলেছি সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধার বিষয় সম্পর্কে। তাহলে এবার জেনে নেয়া যাক সোশ্যাল মিডিয়ার ৫ টি অসুবিধা সম্পর্কে।
  • সাইবার গুন্ডামি -- বিভিন্ন নিউজ পেপারে বা নিউজে জানা যায় অতীতে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বাচ্চারা সাইবার গুন্ডামির শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে যে কেউ ফেক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে যা খুশি তাই করতে পারে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে। ইন্টারনেটের এ সকল গুন্ডামি যেমন হুমকি, ধমকি এবং গুজব যার সমাজকে অসণাপ্ত করে তুলেছে
  • হ্যাকিং -- প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনাদের তথ্য এবং গোপনীয়তা খুব সহজেই হ্যাক করতে পারে এবং তার খুব সহজে ইন্টারনেটের ছড়িয়ে যেতে পারে। যা অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ব্যক্তিগত জীবন দূরবিশয় করে তুলতে পারে। ঠিক তেমনি করে ই অ্যাকাউন্ট সম্প্রতিক তথ্য ব্যবহার করে অনেক মানুষের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারে এবং এটি আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ সকল বিষয় হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার মারাত্মক ক্ষতির কারণ বা অসুবিধা।
  • আসক্তি -- আমরা ইতিপূর্বেই আসক্তির সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। সোশ্যাল মিডিয়ার নেশা এসে খুব খারাপ একটি নেশা। বিশেষ করে টিনেজাররা এর মাধ্যমে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। তারা খুব বাজে ভাবে এর মধ্যে আসক্ত হয়ে পড়ে এবং সমাজ থেকে আলাদা হয়ে পড়ে।
  • প্রতারণা -- সোশ্যাল মিডিয়া বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা দেখতে পাওয়া যায়। যা বেশিরভাগ সময়েই ঘটতে থাকে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
  • গ্ল্যামার ড্রাগ এবং মদ -- সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে যে, অনেকে মানুষ ইন্টারনেটে কিছু ধনী এবং নেশাগ্রস্তদের ফলো করে। ফলে তারা নেতিবাচক চিন্তাধারা এবং কর্মকান্ড উৎসাহী হয়ে উঠতে পারে না। এর ফলে সমাজে তাদেরকে ভিন্ন চোখে দেখা হয়। এটি একেবারে উচিত না। কারণ তাদেরকে ভিন্ন চোখে না দেখে তাদেরকে ভালো হতে উৎসাহিত করা উচিত।

দৈনন্দিন জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার এসকল অসুবিধা ছাড়াও আরো নানা ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে। উপরোক্ত অসুবিধা গুলো দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার হওয়ার ফলে এ সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি আপনারা হয়তো বুঝতে পারছেন। যে দৈনন্দিন জীবনে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন সুবিধা ছাড়াও অনেক অসুবিধাও রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারী দিক গুলো

সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারি সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেকেরই অজানা। তাই আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মূল উপকারি দিক সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি আসুন।

সোশ্যাল মিডিয়ার অনেকগুলো ভালো দিক রয়েছে এর মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো -
  • যোগাযোগের সুবিধা -- সোশ্যাল মিডিয়া হলো যোগাযোগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এর মাধ্যমে আমরা যে কোন জায়গা থেকে যেকোনো ব্যক্তির সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারি। এবং তার সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারি। এমনকি আমরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবসহ আরো অন্যান্য মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়ে থাকি।
  • তথ্যের প্রচার এবং বিনিময় -- সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য প্রচার এবং বিনিময় একটি অতি শক্তিশালী মাধ্যম। এটি ব্যবহার করে আমরা যে কোন ভাবে যে কোন জায়গায় তথ্য প্রচার করতে পারে এবং অন্যদের মাঝে তথ্য শেয়ার করতে পারি।
  • মার্কেটপ্লেস -- সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে। যেগুলোতে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের জিনিসপত্র কেনাকাটা করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা ঘরে বসেই মার্কেট করে ফেলতে পারি। এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে আমরা নিজেদের একটি মার্কেটপ্লেস তৈরি করতে পারি। এবং সেখান থেকে ইনকাম করতে পারি।
সোশ্যাল মিডিয়ার আরো বিভিন্ন ধরনের উপকারী দিক রয়েছে। তবে এর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার অপকারী দিকও রয়েছে। তা হল-

সোশ্যাল মিডিয়ার অপকারি দিক গুলো

সোশ্যাল মিডিয়ার অপকারী দিকগুলো সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কেও অজানা। তাই চলুন এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার অপকারিতা গুলো কি কি এ সম্পর্কে জেনে নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক অপকারী দিক রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের জরিপে উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারের ফলে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে অল্পবয়সী যুবকেরা। বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছে এরা। পড়াশোনায় মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে এবং খেলাধুলা ছেড়ে দিয়ে দিনরাত ইলেকট্রিক ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। এর ফলে বিভিন্ন অল্প বয়সী বিভিন্ন ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই ব্রেনের সমস্যা হচ্ছে বা। অনেকেই পাগল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার সমূহ

আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানেনা। তাই এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানাতে চলেছি সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার সম্পর্কে। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করছি অনেক উপকৃত হবেন।

বিভিন্ন তথ্য প্রকাশের অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন মানুষ একদিক দিয়ে জীবন উন্নত করে তুলছে, ঠিক তেমনি হবেই অন্যদিকে এর অপব্যবহারের ফলের সংঘটিত হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার অপকর্ম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সমূহ।

সোশ্যাল মিডিয়াকে মানুষ নানাভাবে অপব্যবহার করে থাকছে যেমন হ্যাকিং, সাইবার গুন্ডামি ইত্যাদি নানা ধরনের কাজ করে থাকছে এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেকটা ধ্বংস হয়ে পড়ছে। এর সাপেক্ষে আমাদের করণীয় এ সকল কাছ থেকে নিজেদের বিরত রাখা এবং অন্যদেরকে সাবধানতার সহিত অবলম্বন করা।

সোশ্যাল মিডিয়া কেউ অপব্যবহার না করে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কিভাবে ইনকাম করবেন ছাত্র অবস্থায় এ সম্পর্কে নিচে আর্টিকেলটি পড়ুন আশা করছি অনেক উপকৃত হবে।

লেখকের মন্তব্যঃ সোশ্যাল মিডিয়ার মূল ৫ টি উপকারি দিক ও অপকারি দিক জানুন

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানাতে চেয়েছি যে, সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন উপকারী দিক এবং অপকারিত দিক সম্পর্কে। এছাড়াও আরো জানিয়েছি সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা, সোশ্যাল মেটের ভালো এবং ক্ষতিকর দিকসমূহ, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার সহ আরো নানা তথ্য সম্পর্কে।

তাই আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার নিকটবর্তী সকল বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিন। যেন তারা এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পয়েন্টার ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url