১ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা - গর্ভাবস্থায় কী কী খাওয়া উচিত
"আসসালামু আলাইকুম" মা হতে চলেছেন, এজন্য আপনাকে অনেক অভিনন্দন! আজগের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করব যে, ১ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা কিরকম হওয়া উচিত। আপনারা সবাই হয়তো জেনে থাকবেন গর্ভকালীন অবস্থা মা বা মেয়েদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা। এ সময় বাচ্চার গ্রোথ এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য গর্ভবতী মা দের নানা ধরনের পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়, আবার অনেক খাবার কে এড়িয়ে চলতে হয় বা অনেক খাবার থেকে বিরত থাকতে হয়। এমন সময় ভিটামিনযুক্ত ফলমূল খাওয়া অনেকটা জরুরী। তাই আজকে আমরা ১ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করব।
অতঃপর, চলুন এক থেকে নয় মাসের গর্ভবতী মা এবং বাচ্চা দুজনেরই স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য মায়েদের খাবারের তালিকা এবং গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত এবং কি কি ফল খাওয়া উচিত না এগুলো সম্পর্কে জানা যাক।
সূচিপত্রঃ ১ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা এবং গর্ভাবস্থায় কী খাওয়া উচিত
- গর্ভাবস্থায় কী কী খাবার খাওয়া উচিত
- গর্ভাবস্থায় মেয়েদের কী কী ফল খাওয়া উচিত
- গর্ভাবস্থায় মেয়েদের কী কী ফল খাওয়া উচিত না
- গর্ভাবস্থায় দৈনিক খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত
- গর্ভাবস্থায় মেয়েদের সতর্কতা
- ১ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা
- প্রতিবেলায় গর্ভবতী মেয়েদের খাবারের সঙ্গে ফল ও সবজি পরিমাণ বাড়ানোর উপায়
- গর্ভবতী মেয়েদের প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি জাতীয় খাবার
- শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় কী কী খাবার খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। যাতে করে মা এবং শিশু দুজনেই সুস্থ এবং সুন্দর থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হলো মাংস, বাদাম, শস্য-বীজ, মটরশুটি, ফলমূল এবং শাকসবজি যা গর্ভবতী মায়েদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে সহায়তা করে। তবে কিছু কিছু খাবার রয়েছে যা আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে বা বাদ দিয়ে খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় মেয়েদের কী কী ফল খাওয়া উচিত এবং কী কী ফল খাওয়া উচিত না, এই সকল তথ্য আসুন জেনে নেওয়া যাক-
গর্ভাবস্থায় কী কী ফল খাওয়া উচিত
আপনারা যারা এই পোস্টটি পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই হয়তো গর্ভবতী মা বা নিকটবর্তী গর্ভবতী মায়েদের কী কী ফল খাওয়া উচিত সে সম্বন্ধে জানতে চান। আপনি গর্ভবতী হওয়ার পরেও আপনাকে আরও বেশি বেশি করে খাবার খাবার কথা বলা হয়ে থাকে। তবে এটা মনে রাখবেন যে গর্ভবতী মানে এই নয় যে আপনাকে সব সময় বেশি বেশি খেতে হবে। আপনাকে ভালো খাবার খেতে বলার কারণ হলো আপনার এবং আপনার বাচ্চার সুস্বাস্থ্য কামনা করা। যা সকল গর্ভবতী মায়েরায় চেয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় মেয়েদের টাটকা, হিমায়িত ও শুকনো সকল ধরনের ফল খাওয়া ভাল। তবে দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় গর্ভবতী মেয়েদের প্লেটের অর্ধেকে শাকসবজি এবং ফলমূল থাকা উচিত। তার মধ্যে কিছু ফল নিচে উল্লেখ করা হলো-
- কলাঃ ফল-মূলের মধ্যে সবার উপরে কলা ফলটিকে রাখা হয়েছে। কারণ ভিটামিন-সি, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম এর মতো কুষ্টি রয়েছে এর মধ্যে। কলা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা এবং রোগ থেকে আপনাকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। এবং আপনার বাচ্চা এবং আপনাকে সুস্থ এবং হেলদি রাখতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
- পেয়ারাঃ পেয়ারাতে থাকা পুষ্টি সম্পূর্ণ উপাদান গর্ভধারণ অবস্থার সময় অবশ্যই পেতে হবে। কারণ এতে ভিটামিন সি ই এবং আইসোফ্ল্যাভনয়েড ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ থাকে যা গর্ভবতী মেয়েদের এবং শিশুর জন্য অনেক উপকারী। পেয়ারা পাচনে বা বাচ্চার গ্রোথ এ সাহায্য করে থাকে। তাই গর্ভবতী মায়েদের খাবারের বা ফলের তালিকায় পেয়ারা রাখা খুবই জরুরী।
- আপেলঃ আপেল এই ফলটি গর্ভাবস্থায় খাওয়ার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফল। কারণ এই ফলটি খাওয়ার ফলে আপনার শিশুর শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি আপনার বাচ্চার বেড়ে ওঠার সময় বাচ্চার ঠান্ডা লেগে শো শো শব্দ এবং অ্যাজমার ঝুঁকি হতে রক্ষা করে। আপেল একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল এবং এতে ভিটামিন এ ই এবং ডি রয়েছে। তাই গর্ভবতী মেয়েদের ফল খাওয়ার তালিকায় আপেল রাখা আকর্ষণীয়।
- নাশপাতিঃ আপেল এবং নাশপাতি অনেকটা একই রকম উপকার করে থাকে। এবং এতে ফলিক অ্যাসিড উচ্চ পরিমানে পাওয়া যায়। এই ফলগুলো হল ভিটামিন সি এর সমৃদ্ধ উৎস। যা বাচ্চাকে পরিমান মত ভিটামিন সি পেতে সাহায্য করে। তাই নাশপাতি গর্ভাবস্থায় খাওয়া অত্যন্ত জরু।
- আতাঃ আতা একটি ( ভিটামিন এ ) এবং ( ভিটামিন সি ) সমৃদ্ধ ফল। যা বাড়ন্ত শিশুর চোখ, চুল, ত্বক সহ শরীরের টিস্যুর জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করে থাকে। এবং এই ফলটি আপনার শিশুর জ্ঞানশক্তি বাড়াতে অনেকটা সাহায্য করে। তাই গর্ভবতী মায়েদের ফল খাওয়ার তালিকায় আতা রাখা অতীব জরুরী।
- ডালিমঃ ডালিমে ক্যালসিয়াম, লোহা, প্রোটিন এবং ভিটামিন সি সহ আরো নানা ধরনের ভিটামিন থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় মেয়েদের ডালিম খাওয়ার জন্য অনেক সুপারিশ করা হয়। সুতরাং, গর্ব অবস্থায় মেয়ে এবং বাচ্চা দুজনারই সুস্থ থাকার জন্য ডালিম খাওয়া অতি গুরুত্বপূর।
- তরমুজঃ তরমুজের ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ সহ নানা ধরনের ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম রয়েছে। তরমুজ খনিযে ভরপুর। তরমুজ একটি ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। যা বাচ্চাদের এবং মায়েদের ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। তাই গর্ভবতী মায়েদের ফলের খাবারের তালিকায় তরমুজ অতীব জরুরী।
- আমঃ আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি। যা গর্ভ অবস্থায় হজমে অনেকটা সহায়তা করে থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। আম হচ্ছে মৌসুমী ফল যা সব ঋতুতে পাওয়া যায় না, তাই গর্ব অবস্থায় যদি আমের মৌসুম থাকে তাহলে আম বেশি বেশি করে খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় মেয়েদের কী কী ফল খাওয়া উচিত না
গর্ভ অবস্থায় গর্ভবতী মেয়েদেরকে বেশি করে খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। বেশি খাওয়া মানে এই নয় যে অনেক বেশি বেশি করে খাওয়া। বেশি খাওয়ার অর্থ হচ্ছে শাকসবজি এবং ফলমূল বেশি বেশি করে খাওয়া। যেন গর্ভবতী মেয়ে এবং শিশুর দুজনেরই উপকৃত হয়ে থাকে।
তাই এতক্ষন আমরা জানলাম গর্ভবতী মেয়েদের কী কী ফল খাওয়া উচিত। তাই এখন আমরা জানবো গর্ভাবস্থায় মেয়েদের কি কি ফল খাওয়া উচিত না। আসুন জেনে নেওয়া যাক-
অনেক সময় অনেকেই এই সময় বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এর কারণে মায়ের এবং শিশুর বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ডাক্তাররা মায়েদের বিভিন্ন রকম ফল খেতে নিষেধ করে থাকে যেমনঃ কাঁচা পেঁপে, পাকা পেঁপে, আনারস বাচ্চা পেটে থাকার পাঁচ থেকে ছয় মাস পর্যন্ত এইসব ফল না খাওয়া ভালো।
- আঙ্গুরঃ এই ফলটি এমনিতেই উপকারী হলেও গর্ভাবস্থায় আঙ্গুর খাওয়া থেকে গর্ভবতী মেয়েদের বিরত থাকতে বলা হয়। কারণ আঙ্গুরে যে সকল কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলো অনেক বিষাক্ত হয়ে থাকে। যা বাচ্চা এবং মায়ের জন্য অনেক ক্ষতিকারক হতে পারে।
- তেতুলঃ যদিও গর্ব অবস্থায় টক জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস অনেকের থাকে। এই জাতীয় খাবার গর্ভাবস্থায় খাওয়া স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত তেতুল বা টক খাওয়া উচিত না। কারণ এতে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
- কাঁচা বা পাকা পেঁপেঃ পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি এবং শক্তি যা আপনার আমার শরীরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। তবে এটি গর্ব অবস্থায় গর্ভবতী মেয়েদের জন্য একেবারে উপযুক্ত নয়। পেঁপে আপনার আমার দের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা কে এটি এড়িয়ে চলতে হবে, নয়তোবা বাচ্চার অনেক ক্ষতি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় দৈনিক খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত
এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা আলোচনা করেছি এক থেকে নয় মাসের গর্ভবতী মায়েদের এবং গর্ভাবস্থায় কী কী খাওয়া উচিত। এর মধ্যে আমরা যেসব ফল খাওয়া যাবে সেগুলোর তালিকা ও যেসব ফল খাওয়া যাবেনা সে সকল ফলেরও তালিকা দেয়া হয়েছে। আপনি যদি উক্ত তালিকা অনুযায়ী মেনে চলেন তাহলে আপনি ও আপনার বাচ্চা দুজনে ভালোভাবে থাকতে সম্মুখীন হবেন "ইনশাআল্লাহ"। নিচে গর্ভাবস্থায় দৈনিক খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত তা দেয়া হল-গর্ভাবস্থা সাধারণত ১ থেকে ৯ মাস বা ১০ মাস হয়ে থাকে। এই সময় কালকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সময়কাল গুলো হলঃ-
- প্রথম তিন মাসকে ( ১-৩ মাস ) বলা হয়ে থাকে ১ম ট্রাই মিস্টার।
- দ্বিতীয় তিন মাসকে ( ৪-৬ মাস ) বলা হয়ে থাকে ২য় ট্রাই মিস্টার।
- এবং শিশু বা বাচ্চা জন্মগ্রহণ করার আগ পর্যন্ত বলা হয় ৩য় ট্রাই মিস্টার।
ট্রাই মিস্টার মানে খাদ্য তালিকা। এক এক ট্রাই মিস্টারের মাধ্যমে শিশুর একেক রকম ভাবে গ্রোথ বৃদ্ধি পায়। তাই গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকার সাধারণ ধারণা দেওয়া হলো। একটি গর্ভবতী মায়ের দৈনিক ১৬০০ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার খেতে হবে। যেন পর্যাপ্ত ক্যালরির না পাওয়ার কারণে বাচ্চার কোনরকম সমস্যা না হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্তায় মায়েদের সর্তকতা
গর্ভাবস্থায় বিভিন্নভাবে গর্ভবতী মা ডিম খেতে পারে এতে করে কোন সমস্যা হয় না। তবে মনে রাখতে হবে যে সেটি পুরোপুরি ভাবে সিদ্ধ বা রান্না হয়। দুধের সঙ্গে পাস্তুরিত দুধ বেছে নেয়া অতিব জরুরী। এবং গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত কলিজা খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা কলিজাতে অনেক পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে, তাই অতিরিক্ত ভিটামিন এ গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকারক দিক হতে পারে।
তবে মাঝে মাঝে বা সপ্তাহে একবার অথবা তার চেয়েও কম ৪০ থেকে ৭০ গ্রাম রান্না করা কলিজা খাওয়া যেতে পারে,এতে করে কোন সমস্যা হয় না। এবং গর্ভকালীন সময়ে কড মাছের তেল বা কড লিভার অয়েল খাওয়া যাবে না। কারন এটিতে ভিটামিন এ দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে। এর আগেই বলা হয়েছে, যে অতিরিক্ত ভিটামিন এ গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকারক দিক হতে পারে।
১ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা
আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা এক থেকে নয় মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকার সকল খাবার তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখন আমরা জানবো। প্রথমতো-
১ থেকে ৩ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী কী রয়েছে এই খাবার তালিকার মধ্যে-
গর্ভকালীন সময়ে প্রথম তিন মাসে তেমন একটা অতিরিক্ত খাবারের প্রয়োজন হয় না। কারণ এ সময় আপনার কেলোরির চাহিদা আপনার উচ্চতা, ওজন এবং দৈনিক শারীরিক পরিশ্রমে পরিমাণ সহ বেশ কিছু জিনিসের উপরে নির্ভর করে থাকবে। ওজন বৃদ্ধি হতে থাকলে সেই অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ কমিয়ে এবং শারীরিক ব্যামের পরিমাণ বাড়িয়ে স্বাভাবিক ওজনে আসার চেষ্টা করতে হবে।
গর্ভবতী নারীদের সারাদিনের খাবারের তালিকা একটি নমুনা চার্ট দেখানো হলো। এই তালিকাটি ১৭৫০ ক্যালরি থেকে ১৮০০ ক্যালরির করা হোল। উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি, গর্ভধারণের আগে ওজন ৫৫ কেজি ও সপ্তাহের ২ থেকে ৩ দিন হালকা ব্যায়াম করেন এমন নারীর জন্য এই তালিকাটি প্রযোজ্য হবে। অন্যথায় সকল নারীর জন্য ওজন এবং হাইট বা উচ্চতা অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে নিলেই হবে।
খাবারের ধরন এবং পরিমাণঃ
- ভাত ( লাল চালের হলে ভালো হয়ে থাকে ) এবং এর পরিমাণ ২.৫-৩ কাপ ( ৫০০-৬০০ গ্রাম )।
- গাঢ় সবুজ শাক এবং লাল শাকের পরিমান ১-১.৫ বাটি ( ২৫০-৩৭৫ গ্রাম )।
- হলুদ অথবা কমলা ফল এবং সবজির পরিমাণ ১ বাটি ( ২৫০ গ্রাম )।
- ডিমের পরিমাণ প্রতিদিন ১ টি ( পুরো সিদ্ধ হওয়া ডিম )।
- দুধের পরিমাণ প্রতিদিন ১ গ্লাস ( ২৫০ গ্রাম )।
- মাছ অথবা মাংসের পরিমাণ সপ্তাহে ২ দিন বা ৩ দিন ( ১ টুকরো বা ৫০ গ্রাম )।
- ঘন ডালের পরিমান ২ বাটি ( ৫০০ গ্রাম )।
উপরিউক্ত, তালিকার খাবারগুলো রান্নার সময় প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত পরিমাণে তৈল ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে রান্নায় তৈরি ব্যবহারের ফলে খাবারের পুষ্টিগুণ না বাড়লেও ক্যালরির পরিমাণ বেশ খানিকটা বাড়তি হয়ে যায়।
এবার ৪ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা সম্পর্কে জানা যাক-
গর্ভবতী মায়েদের গর্ভের শিশু বা বাচ্চা বেড়ে ওঠার সাথে গর্ভবতী নারীদের খাবারের চাহিদাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। তাই গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের পর থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় খাওয়া দাওয়ার পরিমাণ কিছুটা বাড়াতে হয়। অতঃপর, স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় ৪ মাস থেকে ৬ মাসের গর্ভবতী মেয়েদের প্রথম তিন মাসের চেয়ে প্রতিদিন বা প্রতিনিয়ত প্রায় ৩৪০ থেকে ৩৫০ ক্যালোরি অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
অন্যদিকে একজন স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় ৭ মাস থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মেয়েদের অন্যান্য সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৫০ থেকে ৪৬০ ক্যালরি অতিরিক্ত খাবার খেতে হয়। তবে আপনার ওজন যদি বেশি হয়ে থাকে তাহলে একটু কম পরিমাণে অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে। এই বিষয়ে আপনার নিকটবর্তী ডাক্তারের কাছ থেকে বিস্তারিত পরামর্শ নিতে পারেন। যা আপনার এবং বাচ্চার দুজনারই উপকার হয়ে থাকবে।
প্রতিবেলায় গর্ভবতী মেয়েদের খাবারের সঙ্গে ফল ও সবজি পরিমাণ বাড়ানোর উপায়
অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা পূরণের জন্য তিন বেলা খাবার খাওয়ার পাশাপাশি দিনে আরো দুই বার হালকা বা নরম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। হতে পারে খাবারটি একটি ফল, ৬-৭ টি বাদাম বা আধা কাপ টক দই। অতঃপর, তবুও যদি ক্ষুধা লাগে তাহলে যেকোনো সময়েই পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানি খেয়ে নিতে হবে। এতে করে শিশুর গ্রোথ ও শক্তি হইতে সাহায্য করে যা শিশুর একটি উপকারী দিক।
গর্ভবতী মেয়েদের প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি জাতীয় খাবার
আপনাদের শিশুদের বা বাচ্চাদের শারীরিক গঠন বৃদ্ধির জন্য আপনাকে অবশ্যই গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রোটিন জাতীয় যে সকল খাবার তা হলো-
- মাছ।
- মাংস।
- ডিম।
- দুধ।
- ডাল।
- বাদাম।
- মটর, সিম ও মটরসিটি ইত্যাদি।
গর্ভাবস্থায় খেতে পারবেন এমন কিছু তৈলাক্ত মাছ নিচে উল্লেখ করা হলো-
- ইলিশ মাছ।
- বাটা মাছ।
- পুটি মাছ।
- কাজলি বা বাঁশপাতা মাছ।
- চাপিলা মাছ।
- মহাশোল মাছ।
তবে এটা খেয়াল রাখতে হবে যে এই মাছগুলো শুধু সপ্তাহে ২৮০ গ্রামের বেশী খাওয়া যাবে না।
শর্করা জাতীয় খবরঃ
- ভাত।
- রুটি।
- আলু।
- সিরিয়াল বা কর্ণ ফ্লেকস।
- ভুট্টা।
- নুডুলস ও পাস্তা।
- ওটোস ইত্যাদি।
ভিটামিন জাতীয় খাবারঃ
গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত পুষ্টকর খাওয়ার মাধ্যমেই সব ধরনের ভিটামিন পুষ্টি উপাদান চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়ে থাকে না। এইজন্য অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদানের জন্য ট্যাবলেট বা ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। এমন ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ কিছু খাবার-
- ফলিক এসিড
- আইরোন ট্যাবলেট
- ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ইত্যাদি
নয়তোবা, বিভিন্ন প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি-সহ আরো অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উপাদানের ঔষধ সেবন করার দরকার হতে পারে।
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠ্যবৃন্দ আমরা এই আর্টিকেলটি লেখার মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি যে, ১ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা এবং গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া উচিত, গর্ভাবস্থায় মেয়েদের কী কী ফল খাওয়া উচিত, এবং আরো জানিয়েছি গর্ভাবস্থায় মেয়েদের সর্তকতা সম্পর্কে ইত্যাদি আর ও নানা বিষয়।
যদি আমাদের এই লেখা পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে এই পোস্টটি বা আর্টিকেলটি অন্যদের মাঝে শেয়ার করে দিন। যেন তারা এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারে।
"আসসালামু আলাইকুম"
""ধন্যবাদ""
পয়েন্টার ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url